পাচারের নৌকা ধ্বংস করবে ইইউ

প্রকাশঃ মে ১৬, ২০১৫ সময়ঃ ৭:১৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:৩৬ অপরাহ্ণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

manob pacherসাম্প্রতিক সময়ে আদম পাচার বন্ধে নড়েচড়ে বসেছে ইইউ। আর এরই পদক্ষেপ হিসেবে ইইউ এর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। যদিও এসকল পদক্ষেপ নিয়ে তাদের সফলতা কতটুকু আসবে তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত।

ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদন সুত্রে জানা যায়, যেকোন মূল্যে মানব পাচার বন্ধে প্রয়োজনে মানব পাচারকারী নৌকাতে কামান দাগাতে চান তারা। আর এর পরিকল্পনা যে বেশ শক্তভাবে নিয়েছেন তা বোঝা যায় তাদের পদক্ষেপ দেখলেই। তাদের আশা জাতিসংঘ ও লিবিয়ার বিবদমান সমান্তরাল সরকারগুলো সায় দিলে ইইউ জুন মাসেই রণতরি সাজাতে শুরু করবে৷ তাদের কাজ হবে লিবিয়ার সমুদ্রসীমার মধ্যে অথবা সে দেশের উপকূলে আদম ব্যবসায়ীদের জাহাজ শনাক্ত করে সেগুলো ধ্বংস করা৷

এপ্রিল মাসে দুর্ঘটনায় ৮০০-রও বেশি শরণার্থীর মৃত্যুর পর ইইউ শীর্ষ নেতারা ভূমধ্যসাগরে কার্যকর সামরিক অভিযানের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ জার্মান সরকার এমনটা না চাইলেও এখন জার্মানির নেপথ্যে গোটা প্রক্রিয়ার গতি কিছুটা কমানোর চেষ্টা করছে৷

বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এমনটি করা হলে এর ফলাফলই বা কতটা আসবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে। কেননা কোনটা আদম ব্যবসায়ীদের নৌকা, সেটা শনাক্ত করে কে হামলার সিদ্ধান্ত নেবে? আদম ব্যবসায়ী চক্রের মূল পাণ্ডাদের ধরাই উদ্দেশ্য, নাকি তাদের হয়ে যারা কাজ করছে, তাদের দমন করলেই হবে? তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চালানো হবে কোন ভিত্তিতে? ইইউ বাহিনী যদি লিবিয়ার ভূখণ্ডেও আক্রমণ চালায়, সেক্ষেত্রে নিরপরাধ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কাও কি উড়িয়ে দেয়া যাবে? পাল্টা হামলা হলে ইইউ কীভাবে তার মোকাবেলা করবে?

ধারণা মতে, আদম ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি ইউরো আয় করে এবং তারা অনেক সশস্ত্র মিলিশিয়া বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে৷ সোমালিয়া উপকূলে ‘অ্যাটলান্টা’ অভিযানের আওতায় জাহাজগুলি জলদস্যুদের তুলনায় অনেক বেশি সুসজ্জিত ও প্রস্তুত৷

তাদের প্রশ্ন হলো সশস্ত্র অভিযান কি সত্যি ইউরোপের সীমানায় শরণার্থীদের নাটকীয় আগমন বন্ধ করতে পারবে? এর স্পষ্ট উত্তর হলো – না৷ যে সব মানুষ সমুদ্রপথে পালাতে পারবে না, তারা লিবিয়ায় অত্যন্ত করুণ অবস্থায় আটকা পড়বে৷ কিছুকাল পর শরণার্থী ও আদম ব্যবসায়ীরা নতুন পথ খুঁজবে৷ তুরস্ক অথবা টিউনিশিয়া হয়ে তারা ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করতে পারে৷ সবার আগে শরণার্থীদের প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ সংকটের সমাধান করতে হবে৷

তাদের মতে আদম ব্যবসায়ীদের অপরাধ চক্রকে নিষ্কৃয় করতে হলে তাদের নৌকা ডুবিয়ে দিলে কাজ হবে না৷ আইনি পথে শরণার্থীদের ইউরোপে প্রবেশের সুযোগ দিলে আদম ব্যবসায়ীদের চাহিদাই থাকবে না৷ তাছাড়া যে সব দেশ থেকে শরণার্থীরা পালাচ্ছে, সে সব দেশের সরকারের সঙ্গে সংলাপও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ কারণ পালানোর মূল কারণ সেখানেই লুকিয়ে রয়েছে৷

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ রাশিয়া ও চীনের মতো দেশের সমর্থনসহ ইইউ-র সামরিক অভিযানকে অনুমোদন দিলেও লিবিয়ার কর্তৃপক্ষের সম্মতির প্রয়োজন হবে৷

ইইউ-র নতুন সামরিক অভিযান মোটেই স্থিতিশীলতা আনবে না৷ শরণার্থী ও রাষ্ট্র হিসেবে লিবিয়ার জন্য এমন অভিযানের পরিণতি কী হবে, তা আগে থেকে অনুমান করা অত্যন্ত কঠিন৷

 

প্রতিক্ষণ/এডি/নুর/বাদল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G